বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) সম্ভাব্য নেতৃত্ব পরিবর্তন নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। বর্তমান সভাপতি ফারুক আহমেদকে পদ থেকে সরিয়ে অন্তর্বর্তীকালীনভাবে দায়িত্ব দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে।
সূত্র জানায়, বুধবার রাতে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার সঙ্গে ফারুক আহমেদের এক বৈঠকে তার পদত্যাগের বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। যদিও বৈঠকটি কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়।
সম্প্রতি বিসিবির অর্থ একাধিক ব্যাংকে স্থানান্তরের ইস্যুতে ফারুক আহমেদ বিতর্কে জড়ান। ওই বিতর্ক এখনও পুরোপুরি শেষ না হতেই, বিসিবির নেতৃত্বে তার অবস্থান নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এদিকে, আমিনুল ইসলাম বুলবুল বর্তমানে স্ত্রীসহ বাংলাদেশে অবস্থান করছেন এবং আগামী ২ জুন তার অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে তার বাংলাদেশ সফরের পেছনে শুধু পারিবারিক কারণ নয়, বিসিবির অন্তর্বর্তীকালীন নেতৃত্বেও তার নাম আলোচনায় এসেছে বলে জানা গেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ফারুক ও বুলবুল উভয়েই কিছু শর্ত দিয়েছেন। আইসিসিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা বুলবুল বিসিবিতে বিনা বেতনে দায়িত্ব পালনে অনীহা প্রকাশ করেছেন এবং তিনি মাসিক ১২ লাখ টাকা সম্মানীর প্রস্তাব দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ফারুক আহমেদও তার মেয়াদ পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত পদে থাকতে চান বলে ক্রীড়া উপদেষ্টাকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি তো এনএসসি কোটায় বোর্ডে এসেছি। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সরানো হলে সেটা কীভাবে যৌক্তিক হয়?” পাশাপাশি তিনি বিসিবির আগের কমিটির সদস্যদের তুলনা টেনে প্রশ্ন তোলেন, “তাদের তো সরানো হয়নি।”
ফারুক ও বুলবুলের সঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টার আলোচনা আপাতত স্থগিত রয়েছে। তবে পরিস্থিতির পরিবর্তনে যেকোনো সময় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
বিসিবি সভাপতি মনোনয়নের ক্ষেত্রে সরকারের উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপও থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। কারণ ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত অন্য একটি বিষয়েও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে, যা এই সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে।
সব মিলিয়ে বিসিবির পরবর্তী সভাপতির আসনে কার আসছেন, সেটি নিয়ে ক্রিকেট অঙ্গনে জল্পনা-কল্পনা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে যদি বুলবুল তিন মাসের জন্য মাসিক ১২ লাখ টাকা বেতনে দায়িত্ব পান, তবে তিনি হবেন দেশের প্রথম ‘পেইড বিসিবি সভাপতি’—এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।