একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের রায় বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত ছয় সদস্যের আপিল বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল খারিজ করে দেন। এর ফলে হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায়ই চূড়ান্ত রূপ পেল।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। সে সময়ের বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে চালানো ওই হামলায় আওয়ামী লীগের নারী নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শতাধিক নেতাকর্মী। এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়—একটি হত্যা মামলা এবং অপরটি বিস্ফোরক আইনে।
প্রথমে বিচারিক আদালত মামলাগুলোর রায়ে একাধিক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। তবে গত বছরের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এ রায় বাতিল করে দেন এবং তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দেন। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে।
রাষ্ট্রপক্ষের দাবি ছিল, বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজাই যথাযথ এবং সেটি বহাল রাখা উচিত ছিল। অপরদিকে আসামিপক্ষ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখার পক্ষে আইনি যুক্তি উপস্থাপন করে। দীর্ঘ শুনানির পর অবশেষে আজ আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখার ঘোষণা দেয়।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবু সাদাত মো. সায়েম ভূঞা ও সাদিয়া আফরিন। অপরদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও শিশির মনির।
রায়ের পর আদালত প্রাঙ্গণে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, এ রায় ন্যায়বিচারের পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জানান, দীর্ঘদিনের আইনি লড়াই শেষে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।