প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সরকার চাপ প্রয়োগ করলে তিনি পদত্যাগ করবেন, কোনোভাবেই চেয়ারে বসে থাকতে চান না।
শনিবার (২৩ আগস্ট) সকালে রাজশাহী আঞ্চলিক লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (আরপিএটিসি)-এর হলে অনুষ্ঠিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, “যারা ব্যালট বাক্স দখলের স্বপ্ন দেখছেন, তাদের স্বপ্নভঙ্গ হবে। যারা অস্ত্রবাজি করে ভোটে জিততে চাইবেন, তাদের জন্য দুঃসংবাদ। এবার আর কেন্দ্র দখলের ইতিহাস হবে না। কোথাও অনিয়ম প্রমাণিত হলে সেই পুরো কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হবে।”
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, “তারা ঘুঘু দেখেছে, কিন্তু ঘুঘুর ফাঁদ দেখেনি। এবার তারা ফাঁদ দেখবে।”
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কঠোর অবস্থান
সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, দেশের ক্রান্তিলগ্নে তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন। এই নির্বাচন থেকেই নির্ধারণ হবে দেশ কোন পথে এগোবে – গণতন্ত্রের পথে, নাকি অন্য পথে। তাই নির্বাচনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, নির্বাচন কমিশন কোনো রাজনৈতিক প্রভাবে পরিচালিত নয় এবং কোনো বিতর্কেও তারা জড়াতে চান না। শুধু সরকারের দায়িত্ব অনুযায়ী নির্বাচন আয়োজন করাই তাদের কাজ।
প্রস্তুতি ও ভোটার তালিকা
একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে কমিশন পূর্ণ প্রস্তুত জানিয়ে তিনি বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। মৃত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, নতুন যোগ্য ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ৭৭ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মাঠ পর্যায়ে কাজে লাগানো হয়েছে। শিগগিরই চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
নির্বাচন পদ্ধতি ও সেনাবাহিনী
আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে চলমান বিতর্ক প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, “সংবিধানে এই ব্যবস্থা নেই। তাই এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আইন পরিবর্তন হলে সেটা হবে, না হলে নয়।”
তিনি আরও জানান, সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে তারা নির্বাচনে কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে।
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গ
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, দলটির বিচার প্রক্রিয়া চলছে। তাই বর্তমানে তাদের কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নেই। বিচারের রায়ের ওপর নির্ভর করবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন।