গুলশানে চাঁদাবাজির সময় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর সাবেক সমন্বয়ক আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান রিয়াদসহ আরও চারজনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। রিয়াদের গ্রেপ্তারের পর উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য—বিশেষ করে চাঁদাবাজি ও সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ড ঘিরে।
এই প্রেক্ষাপটে ইউরোপপ্রবাসী সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জুলকারনাইন সায়ের খান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি স্ট্যাটাসে অভিযোগ করেছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামই রিয়াদকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন।
৩১ জুলাই বৃহস্পতিবার দেওয়া স্ট্যাটাসে জুলকারনাইন লিখেছেন, “রিয়াদ শুধু একজন ব্যক্তি নয়, বরং একটি সংগঠিত চাঁদাবাজ চক্রের মূল হোতা। সেই চক্রের পেছনে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ছায়া ছিল, যার মূল উৎস ছিলেন নাহিদ ইসলাম।”
তিনি আরও দাবি করেন, রিয়াদের সঙ্গে নাহিদ ইসলাম ও তার পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। জুলকারনাইন বলেন, “আমি জানতাম, রিয়াদ আপনার (নাহিদ) শেল্টারে ছিল। পরে জেনেছি, আপনার ও আপনার বাবার সঙ্গেও তার সখ্যতা ছিল।”
স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, নাহিদ ইসলাম তাকে ভুল তথ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্ত করেছেন—যেন তিনি রিয়াদের গ্রেপ্তারের পেছনে ছিলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই, রিয়াদের গ্রেপ্তারে আমার কোনো হাত নেই। কেউ যেন মিথ্যা গল্প বানিয়ে আমাকে দোষারোপ না করে।”
জুলকারনাইন সায়ের তার স্ট্যাটাসে ‘কিছু প্রশ্ন’ শিরোনামে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু তুলে ধরেন:
- ঢাবিতে ছাত্রশক্তির প্রভাব কতটা ছিল বিপ্লবের আগে?
- দেশের আর কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সক্রিয় কমিটি ছিল?
- ৫ আগস্টের আগে কি নাহিদ ইসলাম এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাদের চিনতেন?
- একমাত্র ছাত্রশক্তির মাধ্যমেই কি ‘বিপ্লব’ সম্ভব ছিল?
- সাদেক কায়েমের অবদান নিয়ে নাহিদ ইসলামরা কি কোনো বক্তব্য দিতেন, যদি না কেউ তুলে ধরতেন?
স্ট্যাটাসের শেষ অংশে, ‘পুনশ্চ’ হিসেবে জুলকারনাইন লেখেন:
“নাহিদ ইসলাম, আপনাকে জানাচ্ছি—আমি রিয়াদকে কোনো নজরদারিতে রাখিনি। সে যে সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, সেটিও আমার লাগানো না। তার গ্রেপ্তারের ঘটনায় আমার কোনো ভূমিকা নেই। বরং, এ নিয়ে আমার বিরুদ্ধে চালানো অপপ্রচার ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন।”
জুলকারনাইনের বক্তব্যে বিষয়টি স্পষ্ট—গুলশান চাঁদাবাজির ঘটনায় রিয়াদকে ঘিরে যে রাজনৈতিক ছায়া ও অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক কাজ করছিল, তা নিয়ে সমাজের নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনাটি আরও তদন্তের দাবি রাখে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।