আগামী পাঁচ থেকে ছয় দিন দেশের রাজনীতিতে সমঝোতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জানান, নির্ধারিত সময়েই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে যা বলেছেন, তার একদিন পরেও নির্বাচন হবে না। তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই চার্টার’ বা যেকোনো প্রক্লেমেশন থাকুক না কেন, ভোট হবে সঠিক সময়েই।
সরকারের এক বছরের কার্যক্রম তুলে ধরে শফিকুল আলম বলেন, আমরা একটি বিপর্যস্ত দেশ পেয়েছিলাম। সেই দেশকে একটি কার্যকর ব্যবস্থাপনায় আনাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। বিচারব্যবস্থায় এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন, অর্থনীতিতেও ফিরেছে স্থিতিশীলতা।
প্রেস সচিব আরও জানান, সরকারের প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতি তুলে ধরতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বুকলেট আকারে প্রতিবেদন প্রস্তুত করার। গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য আসতে পারে, তবে বাস্তব চিত্র এক বছরেই অনেক অগ্রগতি হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দায়মুক্তি আইন বাতিলের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এই আইনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা অপচয় ও দুর্নীতি হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেই এই আইন বাতিল করেছে এবং এখন ওই খাতে কার্যকর উদ্যোগ শুরু হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জনগণের সামনে তথ্য প্রকাশ করতে। এতে পুলিশ বাহিনীর আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সার্বিক পরিস্থিতি এখন স্থিতিশীল।
ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রেস সচিব বলেন, পরবর্তী মেয়াদে বৈদেশিক বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে। এর জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ইতোমধ্যেই তৈরি হয়েছে।
পররাষ্ট্র নীতিতে দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা হচ্ছে— বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ভারতের পাশাপাশি অন্যান্য দেশের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রক্ষার চেষ্টা চলছে।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংবাদ পরিবেশনে কারও ওপর কোনো ধরনের বাধা নেই। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল বা মিথ্যা তথ্য প্রচার বরদাস্তযোগ্য নয়।
বাণিজ্যিক আলোচনার স্বচ্ছতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিযোগিতার কারণে সবকিছু সরাসরি সম্প্রচারযোগ্য নয়, বিশেষ করে যখন প্রতিযোগী দেশগুলোর মধ্যে ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও ভারত রয়েছে।
সুষ্ঠু ও সংঘর্ষহীন নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি জানান, প্রশাসনের ডিসি, এসপি, ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট সব স্তরে নিরপেক্ষ আচরণ নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, যেসব গণমাধ্যম কর্মীদের ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা দেয় না, তাদের টিকে থাকার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
এভিয়েশন খাত প্রসঙ্গে তিনি জানান, একসঙ্গে ২৫টি বিমান কেনা হবে না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিমানবহর ধাপে ধাপে বাড়ানো হবে। যেহেতু বাংলাদেশের অধিকাংশ পাইলট বোয়িং প্ল্যাটফর্মে প্রশিক্ষিত, তাই বোয়িং বিমানই কেনা হচ্ছে।
যশোর টাইমস/এআই