বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাবি শাখার সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার ‘৩৬ জুলাই: মুক্তির উৎসব’ শীর্ষক একটি কনসার্ট আয়োজনের জন্য ৭০টিরও বেশি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৭৬ লাখ টাকার অনুদানের আবেদন করেন। এই চিঠিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব “স্ট্রংলি রিকমেন্ডেড” লিখে সুপারিশ করায় বিষয়টি আরও বিতর্কিত হয়ে ওঠে।
চিঠিগুলোর কিছু বাংলা, কিছু ইংরেজিতে লেখা এবং সেসবের সঙ্গে যুক্ত করা হয় অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও বিস্তারিত বাজেট। বাংলা ভাষায় করা একটি আবেদনপত্রে ৩৬ জুলাইয়ের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরে বলা হয়, রাজশাহীর গৌরবময় ইতিহাসে ‘জুলাই আন্দোলন’ স্মরণীয় দিন, যেখানে গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে বহু তরুণ প্রাণ হারিয়েছিল। সেই শহীদদের স্মরণেই আয়োজন এই উৎসব।
আবেদনে সালাউদ্দিন আম্মার ছাড়াও স্বাক্ষর করেন কে এস কে হৃদয়, যিনি অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক এবং ক্যাম্পাস বাউলিয়ানার ডিরেক্টর। প্রস্তাবনাটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছেও পাঠানো হয়, এবং উপাচার্য ৯ জুলাই সুপারিশ করেন।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন ২৩ জুলাই দুই লাখ টাকা অনুদান অনুমোদন করে। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে উপাচার্য বলেন, “শুধু সালাউদ্দিন নয়, যেকোনো শিক্ষার্থী সংগঠনের এমন উদ্যোগে সহযোগিতা করাকে আমি দায়িত্ব মনে করি।”

সমালোচনার মুখে ২৭ জুলাই এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে সালাউদ্দিন বিষয়টি ব্যাখ্যা দেন। তিনি এটিকে ‘ভয়াবহ মিডিয়া ট্রায়াল’ উল্লেখ করে বলেন, জুলাইয়ের পর আয় করতে চাইলে কোটি কোটি টাকা আনা যেত। তিনি জানান, রাবি স্টেডিয়ামে বড় একটি কনসার্ট করার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয় তারা আর্থিক সাহায্য দিতে পারবে না। তবে নন-ফাইন্যান্সিয়াল সহায়তার আশ্বাস দেয়।
তিনি আরো লেখেন, “আমি চেয়েছিলাম প্রোগ্রাম শেষে সবাইকে বিস্তারিত রিপোর্ট দেব। কিন্তু এত অসুস্থতার মাঝেও একটা উদ্যোগ নিতে গিয়ে এত চাপ নিতে পারছি না।” তার মতে, এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫টি ব্যাংক আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন পর্যন্ত সংগ্রহ করা অনুদানের মধ্যে রয়েছে:
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক: ১৫ হাজার টাকা
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স: ৩০ হাজার টাকা
সিটি করপোরেশন: ২ লাখ টাকা
পরবর্তীতে আরেক ফেসবুক পোস্টে সালাউদ্দিন জানান, তিনি ১৯টি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করেছেন এবং প্রতিটি পয়সার হিসাব দিবেন। আয়োজন শেষে সম্পূর্ণ ডকুমেন্টস প্রকাশ করবেন। তিনি বলেন, “গত বছর ফেনীর বন্যার কারণে বিজয় উৎসব করা যায়নি। এ বছর তা হবে রাজশাহীতেই, কারণ এই আন্দোলনে রাজশাহীর অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ।”
যশোর টাইমস/এআই