Thursday, May 29, 2025
No menu items!
Homeজাতীয়ক্ষমতা ছাড়ার পরামর্শে শেখ হাসিনার উত্তেজিত প্রতিক্রিয়া: ‘তোমরা আমাকে গুলি করে মেরে...

ক্ষমতা ছাড়ার পরামর্শে শেখ হাসিনার উত্তেজিত প্রতিক্রিয়া: ‘তোমরা আমাকে গুলি করে মেরে ফেলো, গণভবনে কবর দিয়ে দাও’

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশে চলমান গণ-অভ্যুত্থানের উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হলে, তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “তাহলে তোমরা আমাকে গুলি করে মেরে ফেলো, গণভবনে কবর দিয়ে দাও।”
এই ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

গত রোববার রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধসংক্রান্ত এক মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করেন তিনি। শুনানির সময় ট্রাইব্যুনালে ৪ ও ৫ আগস্টের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো তুলে ধরেন, যেগুলোর বেশ কিছু অভিযোগপত্রেও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, “অভ্যুত্থানকালীন সময়টি ছিল রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত অস্থির ও সংকটপূর্ণ। ৫ আগস্ট সকালে সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কিছু কর্মকর্তা গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বসেন এবং তাকে পদত্যাগ করে শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রস্তাব শুনেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, ‘তাহলে তোমরা আমাকে গুলি করে মেরে ফেলো, গণভবনে কবর দিয়ে দাও।’”

শুধু সামরিক কর্মকর্তারাই নন, জাতীয় সংসদের তৎকালীন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীও ওই সময় শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে শুনানিতে উল্লেখ করা হয়। তবে আওয়ামী লীগের ভেতরে এই প্রস্তাব নিয়ে দ্বিমত ছিল। দলের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা, বিশেষ করে তৎকালীন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, এর তীব্র বিরোধিতা করেন।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, “৪ আগস্ট রাতে গণভবনে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ছিল অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ ও শঙ্কাজনক। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন মন্ত্রী, রাজনৈতিক উপদেষ্টা এবং সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন। বৈঠকে পরিস্থতির গুরুত্ব নিয়ে রাগারাগি, বিতর্ক এবং উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে ধাবিত হচ্ছে।”

এই ঘটনাগুলো শুধু রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেই নয়, বরং ওই সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ, নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার গুরুত্ব অনুধাবনের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন চিফ প্রসিকিউটর।

তিনি বলেন, “এই ধরনের ঘটনার নেপথ্য বিশ্লেষণ দেশের ইতিহাস ও গণতন্ত্র চর্চার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমরা চাই সত্য উদঘাটন হোক এবং আইন অনুযায়ী অপরাধীদের বিচার হোক।”

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments