সম্পর্ক উষ্ণ রাখার আহ্বান দিল্লির, শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যের আপত্তি ঢাকার

ব্যাংককে অনুষ্ঠেয় বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রথমবার সাইডলাইন বৈঠক হয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। দুই নেতার সেই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে এমন সব বিষয়ের মধ্যে অন্যতম ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যু। ভারতে বসে শেখ হাসিনার বিভিন্ন উসকানিমূলক বক্তব্যের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে ঢাকা। অপরদিকে, প্রতিবেশী দেশের তরফ থেকেও এসেছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে স্থিতিশীলতা আনে এমন আবহের মধ্য থেকেই মন্তব্য করার প্রতি স্পষ্ট আলোকপাত।

বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার ব্যাপারে ভারতের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পাশাপাশি গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো সমাধানের প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন তিনি।

সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় ৭ রাজ্য বা সেভেন সিস্টার্স নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন ইউনূস। ভারতের রাজনীতিবিদরা বিষয়টি ভালোভাবে নেননি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের সময়ে হয়ত সেদিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।

নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বিক্রম মিশ্রি মন্ত্রণালয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বৈঠকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গঠনে ভারত সবসময় সহযোগিতা করবে। তিনি আরও বলেছেন যে ভারত দুই দেশের জনগণকেন্দ্রীক সম্পর্ক চায় এবং বিশ্বাস করে যে পারস্পরিক সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে দুই দেশের জনগণ।

ঢাকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারতের আশ্রিত শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে প্রত্যার্পণসহ তাকে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদানের কথা। সম্প্রতি দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত একাধিক ভার্চুয়াল মিটিংয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য শোনা গেছে যেখানে উসকানিমূলক শব্দ ও কর্মকাণ্ডের উপস্থিতি অনুভব করেছে ঢাকা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে শেখ হাসিনার নামে একাধিক অডিও রেকর্ড। তবে সেই সবগুলো অডিওর কণ্ঠ যে শেখ হাসিনারই, তা নিয়েও অবশ্য কাওকে কাওকে শঙ্কা প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে যে, সবগুলোই শেখ হাসিনার কণ্ঠ কি না।

এর বাইরে সীমান্তে হত্যা বন্ধ করা, গঙ্গা চুক্তির নবায়ন ও তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরসহ বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ সংক্রান্ত ইস্যু উত্থাপন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

উল্লেখ্য, গত ৪ এপ্রিল থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুরু হয়েছে ৩ দিনব্যাপী বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলন। এই সম্মেলনের ফাঁকে একাধিক দেশের সরকার প্রধানের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। আগামী দুই বছরের জন্য বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের এই আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার চেয়ারম্যান পদে থাকবে বাংলাদেশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here