যশোর শহরের চাঁচড়া রায়াড়ার স্কুল ছাত্র আব্দুল্লাহ খান হত্যা মামলায় কিশোর অপরাধী তাওহীদকে ১০ বছরের আটকাদেশের রায় দিয়েছে একটি আদালত। এ মামলার অপর ৪ কিশোরের হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেয়া হয়েছে। সোমবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. গোলাম কবির এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছেন। তাওহীদ যশোর শহরের শংকরপুর আশ্রম রোডের মোহাম্মদ শাহীনের ছেলে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, আব্দুল্লাহ খান চাঁচড়া রায়পাড়ার মুরাদ খানের পালিত ছেলে। সে রেলরোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল। কিশোর অপরাধীরা আব্দুল্লাহ খানের পূর্ব পরিচিত। এলাকার কর্তৃত্ব নিয়ে তাদের সাথে তার দ্বন্দ্ব চলে আসছিলো।
২০১৯ সালের ৬ জুন সন্ধ্যায় কিশোর অপরাধী আকাশের কাছে মোবাইল ফোন করে আব্দুল্লাহ খান জানতে চায় তারা কোথায় রয়েছে। জবাবে আকাশ তাকে জানায়, সেসহ তাওহীদ, মাসুদ রানা, নয়ন ও আশিক এয়ারপোর্ট রোডে ঘোরাঘুরি করছে। এ কথা শুনে পূর্ব দ্বন্দ্ব থাকায় উচ্চস্বরে তাওহীদ সম্পর্কে কিছু কথাবার্তা বলে আব্দুল্লাহ খান। যা শুনে ফেলে তাওহীদ এবং ক্ষিপ্ত হয় আব্দুল্লাহর উপর। এরপর ইজিবাইকযোগে তাওহীদসহ উল্লিখিত কিশোর অপরাধীরা রেল রোডের হোটেল শাহানাজের গলির ভেতর আসে। তারা সেখানে আব্দুল্লাহ খানকে পেয়ে এলোপাতাড়ি মারধর এবং তাওহীদ বাম পায়ের উরুতে ছুরিকাঘাত করে। এর পরপরই কিশোর অপরাধীরা গুরুতর আহত আব্দুল্লাহকে ফেলে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আহত আব্দুল্লাহকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুল্লাহকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের পালিত পিতা মুরাদ খান ৫ কিশোরকে আসামি করে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় ওই ৫ জনকে অভিযুক্ত করে ওই বছরের ১৬ অক্টোবর আদালতের দোষীপত্র জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আলিমুজ্জামান। এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে কিশোর অপরাধী তাওহীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে ১০ বছরের আটকাদেশ দিয়েছেন। এ সাথে মামলার অপর ৪ কিশোর অপরাধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দিয়েছেন বিচারক।
খালাসপ্রাপ্তরা হলো, বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক মোড়ের মৃত শেখ জাহিদ হাসানের ছেলে আকাশ, রেল রোডের রুহুল হাজীর বাড়ির ভাড়াটিয়া সেলিম হোসেনের ছেলে মাসুদ রানা, চাঁচড়্া রায়পাড়ার বিল্লালের বাড়ির ভাড়াটিয়া মোহাম্মদ রাহাতের ছেলে নয়ন ও আশ্রম মোড়ের আব্দুল গফ্ফারের ছেলে আশিকুল ইসলাম আশিক। সাজাপ্রাপ্ত কিশোর অপরাধী তাওয়হীদ কারাগারে আটক আছে।
Leave a Reply