চিকিৎসক, আইনজীবী, শিক্ষক ও ব্যবসায়ী প্রাধান্যে পেশাজীবী মুখ
নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর:
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে যশোর জেলার ছয়টি আসনে একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রথম নির্বাচনে দলটি এবার প্রার্থী নির্বাচনে পেশাগত বৈচিত্র্য এনেছে।
চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পেয়েছেন বিশিষ্ট শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী, ব্যবসায়ী ও কলেজ অধ্যাপকরা। প্রার্থীরা ইতোমধ্যে সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে শুরু করেছেন।
যশোর-১ (শার্শা): মাওলানা আজিজুর রহমান
২০০৮ সালে চারদলীয় জোটের প্রার্থী ছিলেন মাওলানা আজিজুর রহমান। এবার তিনি জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে শার্শা আসনে লড়ছেন। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে যুক্ত তিনি এখন নিয়মিত প্রচারণায় ব্যস্ত।
যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা): যুক্তরাজ্য ফেরত শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মোসলেহ উদ্দিন ফরিদ
ত্রিশ বছর যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি হসপিটালস বার্মিংহামে কার্ডিওলজি কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন ডা. ফরিদ। দেশে ফিরে তিনি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সহায়তা কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছেন।
ডা. ফরিদ বলেন,
“সব ধর্ম-বর্ণ, শ্রেণি-পেশার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছি। জনগণের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছি।”
যশোর-৩ (সদর): সাবেক ছাত্রনেতা ও ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের
সরকারি এমএম কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের এবার জামায়াতের প্রার্থী। তিনি নিয়মিত গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন।
আব্দুল কাদের বলেন,
“মানুষ এবার নেতৃত্বে পরিবর্তন চায়। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির এমপি দেখেছে—এবার নতুন নেতৃত্ব দেখতে চায়।”
যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর): অধ্যাপক গোলাম রসুল
জেলা জামায়াতের আমির ও হামিদপুর আল-হেরা ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক গোলাম রসুল এবার প্রার্থী হয়েছেন। তিনি নিয়মিত মাঠে গণসংযোগ করছেন এবং তৃণমূলে কর্মী-সমর্থকদের সক্রিয় করছেন।
যশোর-৫ (মণিরামপুর): সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী গাজী এনামুল হক
অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মানবিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত তিনি বর্তমানে ভোটের মাঠে সরব। অনুসারীদের দাবি, আগস্টের ঘটনাপরবর্তী সময়ে তিনি এলাকাবাসীর পাশে ছিলেন।
যশোর-৬ (কেশবপুর): অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মোক্তার আলী
কেশবপুর কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মোক্তার আলী ১৯৯৬ সালেও জামায়াতের প্রার্থী ছিলেন। সজ্জন ও জনপ্রিয় ব্যক্তি হিসেবে এলাকায় পরিচিত তিনি আগেভাগেই ভোটের মাঠে নেমেছেন।
‘বৈচিত্র্যময় প্রার্থী নির্বাচনে তৃণমূলে সাড়া’
জেলা জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারি অধ্যাপক মো. শাহাবুদ্দিন বিশ্বাস বলেন,
“চিকিৎসক, আইনজীবী, অধ্যাপক, ব্যবসায়ী—সব পেশার প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ায় তৃণমূলে ইতিবাচক সাড়া মিলছে। দলীয় ভাবমূর্তি আরও শক্ত হয়েছে, যা ভোটে প্রভাব ফেলবে।”
ভোটের মাঠে মানবিক বার্তা নিয়ে জামায়াত
যশোরের ছয় আসনের প্রার্থীরা মানবিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করছেন। নির্বাচনে এবার পেশাজীবী নেতৃত্বকেই জামায়াত সামনে আনতে চায়।