যশোর জেলা থেকে বৈধ পথে বিদেশে গেছেন প্রায় ৪২ হাজার ৫৮০ জন প্রবাসী। জনশক্তি রপ্তানির দিক থেকে দেশের মধ্যে জেলার অবস্থান ১৭তম হলেও রেমিট্যান্স প্রাপ্তিতে এটি পিছিয়ে রয়েছে ২২তম স্থানে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন যশোর জেলা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান অফিসের সহকারী পরিচালক শাহারিয়ার হাসান।
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, ১৯৭৬ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত যশোর জেলা থেকে বৈধভাবে বিদেশে গমন করেছেন কয়েক হাজার মানুষ। তবে অবৈধভাবে গমনকারীদের সঠিক পরিসংখ্যান সরকারি দপ্তরে নেই। বর্তমানে জেলার বহু মানুষ দালাল, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু বা ভ্রমণ এজেন্সির মাধ্যমে উন্নত জীবনের আশায় বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন।
বিশেষ করে ইউরোপের রোমানিয়া ও সাইপ্রাসে অনিয়মিত পথে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এদের বেশিরভাগই যাচ্ছেন অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে, যা তাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসনে পরিণত হচ্ছে। এই অদক্ষ অভিবাসন এবং অনিয়মিত পথে বিদেশযাত্রার কারণে রেমিট্যান্স আয়েও প্রভাব পড়ছে।
জনশক্তি অফিসের পক্ষ থেকে নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে: বিদেশে যেতে ইচ্ছুকদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচার-প্রচারণা, দালালদের তালিকা তৈরি, বিদেশফেরত অভিবাসীদের জন্য মানসিক কাউন্সেলিং ও আইনি সহায়তা এবং পুনর্বাসনের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা।
এ বিষয়ে ব্র্যাক মাইগ্রেশন কর্মসূচির সিনিয়র অফিসার সাজ্জাদ হোসেন জানান, যশোর থেকে অনেকেই প্রতারণার শিকার হয়ে ফিরে এসেছেন। ‘প্রত্যাশা-২’ প্রকল্পের আওতায় এসব ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসীদের জন্য ব্র্যাক দুই কোটিরও বেশি টাকার আর্থিক সহায়তা দিয়েছে এবং এ সহায়তা এখনো চলমান।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার বলেন, অবৈধভাবে বিদেশ গমনকারীদের সংখ্যা যশোরে উল্লেখযোগ্য। তারা প্রায়শই প্রতারণার শিকার হন এবং পরে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন। বৈধ উপায়ে বিদেশে গেলে কর্মসংস্থান যেমন নিশ্চিত হয়, তেমনি দেশের রেমিট্যান্স আয়েও ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। এই বিষয়ে জনশক্তি অফিস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।