যশোরের অভয়নগরে কৃষকদল নেতা তরিকুল ইসলাম (৫০) হত্যাকাণ্ডে যুবদলের দুই নেতাসহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (২৬ মে) রাতে নিহত তরিকুল ইসলামের বড় ভাই রফিকুল ইসলাম টুলু অভয়নগর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
পুলিশ এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন—ডহর মশিয়াহাটী গ্রামের সুজিত বিশ্বাসের ছেলে সাগর বিশ্বাস (২৭) এবং রামনগরের সিদ্দিক খানের ছেলে ফিরোজ খান (৩৫)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও মাছের ঘের নিয়ে পূর্ববিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এজাহারে যাদের নাম রয়েছে, তারা হলেন—ঘটনাস্থলের বাড়ির মালিক বিরেশ্বর বিশ্বাসের ছেলে পিন্টু বিশ্বাস (৪৫), দিলীশ্বর বিশ্বাসের ছেলে দিনেশ (৩৫), কার্তিক বিশ্বাসের ছেলে দুর্জয় (২৫), নিরঞ্জন বিশ্বাসের ছেলে অজিত (২৭), বিকাশ বিশ্বাসের ছেলে পল্লব (৩৫), বিনয়ের ছেলে গজো ওরফে পবন বিশ্বাস (২৮), নিরাপদ মণ্ডলের ছেলে অতীত মণ্ডল (৪০), এবং যুবদল নেতা আকরাম আক্তার কোরাইশি পাপ্পু (৩৫) ও মাসুদ পারভেজ সাথী (৪০)।
এদিকে, যুবদলের দুই নেতা পাপ্পু ও সাথীর নাম মামলা থেকে প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় নওয়াপাড়া বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও থানা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে উপজেলা বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের একটি অংশ। এ কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন পৌর বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আসাদুজ্জামান জনি।
বক্তারা অভিযোগ করেন, হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে পাপ্পু ও সাথী মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন, অথচ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাদের নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তারা জানান, এই দুইজন আসন্ন যুবদল সম্মেলনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী। তাদের নাম প্রত্যাহার না করলে আগামী বুধবার থেকে অভয়নগর অবরোধের হুমকি দেন বক্তারা।
অভয়নগর থানার ওসি আব্দুল আলিম জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি, ওই হত্যাকাণ্ডের পর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা দায়ের হয়েছে। তবে এই মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ২২ মে সন্ধ্যায় ডহর মশিয়াহাটী গ্রামে একটি বাড়িতে ঢুকে কৃষকদল নেতা তরিকুল ইসলামকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর স্থানীয় অন্তত ১৮টি হিন্দু পরিবারের বাড়িতে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এছাড়া সুন্দলী বাজারের দুটি দোকানে আগুন এবং আরও চারটি দোকানে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।