যশোর শহরের মণিহার এলাকায় মাদকের টাকা না পেয়ে নিজের পালক মাকে নির্মমভাবে হত্যার অভিযোগে শেখ শামস (২৪) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। নিহত সুলতানা খালেদা খানম সিদ্দিকা (৬৪) তার দত্তক মা ছিলেন।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, শনিবার সকাল থেকে বাসার ভাড়াটিয়ারা পানি না পেয়ে বেশ কয়েকবার সুলতানাকে ডাকাডাকি করেন। কোনো সাড়া না পেয়ে তারা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। মেঝেতে পড়ে থাকা সুলতানার নিথর দেহ দেখতে পায় তারা।
ঘটনার সময় ঘরের ভেতরেই ছিলেন তার পালক ছেলে শেখ শামস। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আটক করে।
নিহতের ভাগ্নে এস এম মাহমুদুল কবীর জানান, নিঃসন্তান সুলতানা খালেদা খানম সিদ্দিকা শামসকে মাত্র তিন মাস বয়সে দত্তক নেন এবং অনেক আদর-যত্নে বড় করে তোলেন। তবে বড় হয়ে শামস মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে এবং প্রায়ই মায়ের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতো। এ নিয়ে কেউ জানলেও, সুলতানা কখনো প্রকাশ করেননি।
কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে—শুক্রবার রাতভর মা সুলতানাকে বাঁশ দিয়ে পেটায় শামস। পরে সকালে সে নাস্তা খেয়ে ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। তার ব্যাগ গুছানো অবস্থায় পাওয়া যায়, যা দেখে ধারণা করা হচ্ছে, সে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে সে মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন ওসি। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এ নির্মম হত্যাকাণ্ডে এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোক ও ক্ষোভ।