বাংলাদেশের গ্রামীণ সংস্কৃতিতে ঘোড়দৌড়, ষাঁড়ের লড়াই বা মোরগ লড়াই যেমন পরিচিত দৃশ্য, ছাগলের দৌড় প্রতিযোগিতা তেমনই এক নতুন ও ব্যতিক্রমী আয়োজন। যশোরের কেশবপুর উপজেলার আটন্ডা গ্রামে শুক্রবার দুপুরে এই ব্যতিক্রমী প্রতিযোগিতা দেখতে ভিড় করেন শত শত দর্শক।
গ্রামের যুব সমাজের উদ্যোগে আয়োজিত ছাগল দৌড় প্রতিযোগিতা মুহূর্তেই পরিণত হয় উৎসবমুখর এক আয়োজনের। প্রতিযোগিতা শুরুর আগেই মাঠের দুই পাশে জড়ো হন নানা বয়সী মানুষ। রঙিন সাজসজ্জায় চারপাশ হয়ে ওঠে জমজমাট।
আশপাশের এলাকা থেকে অংশ নেয় প্রায় ৩০টি পালিত ছাগল। প্রতিযোগিতার সুবিধার্থে প্রতিটি ছাগলের গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হয় আলাদা নম্বর লেখা কার্ড। মালিকদের উপস্থিতিতে এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় পাঁচটি রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিযোগিতা।
শেষ পর্যন্ত অটন্ডা গ্রামের মাহফুজ হোসেনের ছাগল প্রথম স্থান অর্জন করে। দ্বিতীয় স্থান পায় শাহিদুল ইসলামের ছাগল এবং তৃতীয় হয় সাইফুল ইসলামের ছাগল। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে তুলে দেওয়া হয় ঘড়ি, জগ ও মগসহ নানা উপহারসামগ্রী।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় চিংড়ি চাষি ও আয়োজক কমিটির সভাপতি হাসিবুল হাসান শান্ত। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকর্মী ফেরদৌস রহমান।
এ আয়োজন সম্পর্কে স্থানীয় এক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজু আহমেদ বলেন, “এই প্রথম ছাগলের দৌড় দেখলাম। সত্যিই দারুণ একটি আয়োজন।”
প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূর থেকে দৌড় দেখতে আসা রনি হোসেন জানান, “এ রকম আয়োজন আগে কখনো দেখিনি। না আসলে অনেক কিছু মিস করতাম।”
আরেক দর্শক আফরোজা বেগম বলেন, “দুপুরের খাবার শেষ করেই ছাগল দৌড় দেখতে ছুটে এসেছি। খুবই মজার লেগেছে।”
আয়োজক কমিটির সভাপতি হাসিবুল হাসান শান্ত বলেন, “বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণ সংস্কৃতির রঙ ফিরে আনতেই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। মানুষকে আনন্দ দিতে এবং ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন চালিয়ে যেতে চাই।”
/এআই//