যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রতিবন্ধী কার্ডের আবেদন করতে গিয়ে মনিরুল ইসলাম (৪৫) নামে এক ব্যক্তি কর্মচারীদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তাঁকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। ঘটনাস্থলে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রতিবন্ধীর পক্ষ নিয়ে প্রতিবাদ করলে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে আটক করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নেজারত শাখায় রাখা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের মুক্ত করে।
ঘটনাটি ঘটে বুধবার (১৪ মে) দুপুরে, যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম প্রতিবন্ধী কার্ডের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কার্যালয়ের সামনে মনিরুল প্রতিবন্ধী কার্ডের আবেদন করতে গেলে কর্মচারীরা তাকে জানান, এ কার্ড ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংগ্রহ করতে হয়। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মনিরুল সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় উত্তেজিত হয়ে গালমন্দ করেন। তখন দুই কর্মচারী, বাবুল আক্তার ও আবু হাসান, তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। দাবি করা হয়, মনিরুল এক কর্মচারীকে ক্রাচ দিয়ে আঘাত করেন এবং আরেকজনকে কামড়ে দেন। এরপর অন্য কর্মচারীরা এসে তাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ।
এই ঘটনার প্রতিবাদে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পক্ষ নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে তর্কে জড়ান। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে আটক করে নেজারত শাখায় আটকে রাখা হয়।
নেজারত শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহিদুজ্জামান জানান, “প্রতিবন্ধীকে ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হলে ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী অফিস কক্ষে ঢুকে চড়াও হন। একজন বাঁশ নিয়ে দরজা-জানালায় আঘাত করেন, তবে কাঠামোগত ক্ষতি হয়নি।”
আটক শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, তাঁরা শুধু একজন অসহায় ব্যক্তিকে মারধরের প্রতিবাদ করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন যশোর মুসলিম একাডেমি ও জিলা স্কুলের এবং দুইজন যশোর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী।
পরে কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক বাবুল হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং শিক্ষার্থীদের শান্ত করে জেলা প্রশাসকের কক্ষে নিয়ে যায়। বিকেল ৪টার দিকে তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে মারধর করা হয়নি, বরং উত্তেজিত হয়ে তিনি আগে হামলা করেছিলেন। তবে প্রতিবন্ধী মনিরুলের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি এবং তার সঙ্গে যোগাযোগও সম্ভব হয়নি।
ঘটনার তদন্ত ও পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি।