যশোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পুলিশের হেফাজত থেকে হত্যা মামলার আসামি জুয়েল খান (২৬) পালিয়ে গেছেন। রোববার (১৮ মে) বিকেল তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জুয়েল মাগুরার শালিখা উপজেলার রামপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর খানের ছেলে। সে যশোরের বাঘারপাড়া থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলার প্রধান আসামি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে আদালতের দ্বিতীয় তলায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এ জুয়েল খান ও সহ-আসামি হারুন-অর-রশিদ হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদের কারাগারে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। এরপর নারী পুলিশ কনস্টেবল সোনালি আক্তার তাদের নিচতলার হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার সময় জুয়েল দৌড়ে পালিয়ে যায়। অন্য আসামি হারুনকে হাজতে রেখে বিষয়টি কোর্ট ইন্সপেক্টরের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।
পলাতক আসামিকে ধরার জন্য যশোর শহরের ঢোকা-বার্তা সব সড়কে বিশেষ চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। পুলিশ সুপার নূর-ই আলম সিদ্দিকীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
কেন একজন নারী কনস্টেবলকে দুটি হত্যা মামলার আসামিকে একা হাজতখানায় নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল, সে বিষয়ে নূর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, এই ঘটনার তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে আবুল বাশার বর্তমানে ঢাকায় থাকায় তিনি এখনও তদন্ত কমিটির বিষয়ে অবহিত নন।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, পলায়নের ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর বাঘারপাড়ার বুধোপুর গ্রামে জুয়েল খান ও তার সহযোগীরা চালক আল-আমিনকে হত্যা করে তার ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ছিনতাই করেন। পরে ওই বছরের ১৫ ডিসেম্বর র্যাব-৬ খুলনার একটি বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে জুয়েলসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তারা হত্যার কথা স্বীকার করে এবং ইজিবাইকের ব্যাটারি, চাকা ও হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি জব্দ করা হয়।
২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর জুয়েল ও হারুনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। মামলাটি বর্তমানে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এ বিচারাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুয়েল আদালতের মূল গেট দিয়ে বেরিয়ে পাশের মসজিদের পাশে থেকে খড়কি এলাকার দিকে দৌড়ে পালিয়েছে। আদালত চত্বরে উপস্থিত অনেকেই তাকে ধাওয়া করলেও আটকাতে পারেননি।