Tuesday, June 17, 2025
No menu items!
Homeযশোরযবিপ্রবিতে সক্রিয় তেল চুরির সিন্ডিকেট, হাতেনাতে ধরা

যবিপ্রবিতে সক্রিয় তেল চুরির সিন্ডিকেট, হাতেনাতে ধরা

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) সক্রিয় তেল চুরির সিন্ডিকেট। সোমবার (২১ এপ্রিল) ভোরে বিভিন্ন গাড়ি থেকে চুরি করা প্রায় ৬১ লিটার তেল জব্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এসময় তেল চুরির ঘটনা সত্য বলে শিক্ষার্থীদের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে অভিযুক্ত বাসের ড্রাইভার ও হেল্পাররা।

জানা যায়, যবিপ্রবির পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (ইএসটি) বিভাগের শিক্ষার্থী হান্নান হোসেন তেল চুরির খবর পেয়ে ভোর চারটা থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে চোর ধরার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। পরবর্তীতে ভোর ছয়টায় সন্দেহ করা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাপলা বাস চাঁচড়ার উদ্দেশে ক্যাম্পাসের গ্যারেজ থেকে বের হয়ে প্রধান ফটকের সামনে আসলে ওই জায়গায় বাসটিকে আটক করেন তারা। এসময় শিক্ষার্থীদের কাছে বাসে চুরি করা তেল আছে বলে স্বীকার করেন ওই বাসের ড্রাইভার ও হেল্পার। শিক্ষার্থীরা তল্লাশি চালিয়ে শাপলা বাসের বক্স থেকে প্রায় ৬০ লিটারের অধিক জ্বালানি তেল উদ্ধার করে আনসার সদস্যদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করে।

এদিকে চুরির সঙ্গে জড়িত শাপলা বাসের ড্রাইভার শিক্ষার্থীদের কাছে স্বীকার করেন যে, দুইটা গ্রুপে বিভক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ড্রাইভাররা। দুইটা গ্রুপই তেল চুরির সঙ্গে জড়িত। তেল চুরির বিষয়টি এক কিংবা দু’বছর নয়, এটা প্রায় ১০-১২ বছর ধরে চলে আসছে।

চুরির সঙ্গে জড়িত শাপলা বাসের ড্রাইভার বলেন, এই তেল চুরির ঘটনার সঙ্গে কম বেশি সব ড্রাইভারই জড়িত আছে। আমরা ২০-৩০ দিনে অল্প অল্প তেল জমিয়ে আনুমানিক ২০-৩০ লিটার হলে বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাই। ৯০ টাকা প্রতি লিটার করে শানতলায় এই তেল বিক্রি করা হয়।

১০-১২ বছর ধরে চলছে নিয়মিত তেল চুরি, প্রতি লিটার বিক্রি হয় ৯০ টাকা দরে

তেল জব্দকারী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে যবিপ্রবির পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (ইএসটি) বিভাগের শিক্ষার্থী হান্নান হোসেন বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা রাত দুটোর দিকে জানতে পারি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের তেল বের করে ড্রামে রাখা হয়েছে, সেটা সকালে নামাজের পরপরই বের হয়ে যাবে বাসের মাধ্যমে। আমরা এর প্রেক্ষিতে রাত দু’টোয় ১০ থেকে ১২ জনের একটা টিম কাজ করব বলে সিদ্ধান্ত নিই। রাত চারটার দিকে আমরা চার পাঁচজন ভার্সিটির বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে উপস্থিত হই এবং আমরা গাড়ির দিকে নজর রাখতে শুরু করি। এরপরে ভার্সিটির সাংবাদিকদের অবগত করে সেখানে নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে ছয়টার পর পর যখন গাড়িটা আসে তখন গাড়িতে উঠার কথা বলে গাড়ি ডাউন দেওয়া হয় এবং চেক করা হয়, চেক করা হলে সিটের তলায় না পেয়ে বক্স খুলতে বলা হয় বক্সের মধ্যে তেল পাওয়া যায়।

তেল চুরি ঠেকাতে পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাইলেজ সিস্টেম চালু করে, যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট দূরত্বের জন্য নির্দিষ্ট সর্বনিম্ন তেলের পরিমাণ নির্ধারণ করে। তবে বাস ড্রাইভাররা তেল চুরি করার জন্য ধীরে ধীরে গাড়ি চালিয়ে বা বাসের নিয়মানুযায়ী না চালিয়ে বাসের ক্ষতিসাধন করে তেল বাঁচিয়ে তেলগুলো পাইপের মাধ্যমে বের করে নেয়। এক্ষেত্রে মাইলেজ সিস্টেমে সর্বোচ্চ দূরত্বে সর্বনিম্ন তেল খরচের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে এবং তেলের ট্যাংকের লকারে সেন্সর সিস্টেম চালু করলে তেল চুরি ঠেকানো যাবে বলে জানিয়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

thumbnail IMG 20250421 WA0025 20250421 193443940

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যবিপ্রবির পরিবহন প্রশাসক ড. মো. শিমুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা তেল চুরির বিষয়ে মৌখিকভাবে অভিযোগ জানিয়েছে। দু’টি কনটেইনার থেকে ৬১ লিটার তেল জব্দ করেছে শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় বিচার ও তদন্তের জন্য পরিবহণ দফতর থেকে রেজিস্ট্রার দফতর বরাবর চিঠি দিয়েছি।

তেল চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে যবিপ্রবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. এস এম নুর আলম বলেন, শিক্ষার্থীরা দু’টি তেল ভর্তি কনটেইনার জব্দ করে প্রক্টর অফিসে হস্তান্তর করেছে ও মৌখিক অভিযোগ জানিয়েছে। দু’টি কন্টেইনারে প্রায় ৬১ লিটার তেল ছিল। এ ঘটনায় জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা ও শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments