1. jashoretimesbd@gmail.com : admin :
  2. contact@thejashoretimes.com : যশোর টাইমস ডেস্ক : যশোর টাইমস ডেস্ক
শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ০১:৪৩ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ
যশোরে অজ্ঞান পার্টির হোতা আবু সাঈদ গ্রেফতার ইসরায়েলকে ‘গণহত্যাকারী রাষ্ট্র’ আখ্যা স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর, বাণিজ্য বন্ধের ডাক স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের দায়ে যশোরে ৪ ক্লিনিককে জরিমানা রাতের মধ্যে যশোরসহ যেসব জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড় যশোরে রেললাইনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির করুণ মৃত্যু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখোশে চাঁদাবাজি, আটক ৮ যশোরে খাদ্য নিরাপত্তা অভিযান, কাচ্চি ডাইন, আড্ডাখানাসহ চার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা যশোরে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের মাঝে চেক বিতরণকালে বিশৃঙ্খলা, ভুয়া নামের অভিযোগ শিক্ষার্থীদের যশোরে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা, বাস উল্টে আহত ১০ আওয়ামী লীগের সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ফেসবুক-ইউটিউবসহ, বন্ধে চিঠি প্রেরণ

জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদদের তালিকা: যশোরে ৩ জনকে নিয়ে বিতর্ক

  • আপডেটের সময়ঃ রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদদের গেজেটে যশোর জেলার অন্তর্ভুক্তদের মধ্য থেকে তিনজনকে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে একজনের নামে হত্যা মামলাও রয়েছে। এরা অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তিনজনই স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ছিলেন। এরা যশোরের আলোচিত জাবির হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মারা যান।

গত বছরের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর এদিন বিকেলে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন হোটেল জাবিরে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় কিছু সুযোগসন্ধানী দুর্বৃত্ত লুটপাট চালাতে হোটেলটিতে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে আগুনের ভয়াবহতায় তারা আর হোটেল থেকে বের হতে পারেননি। আগুনে ওই তিনজনসহ মোট ২৪ জন মারা যান। 

এদিকে জুলাই আন্দোলন চলাকালে ওই তিনজনকে উল্লেখযোগ্যভাবে দেখেননি বলে যশোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক জানান। যে তালিকায় আবু সাঈদ ও মুগ্ধের মতো বিপ্লবীদের নাম রয়েছে, সে তালিকায় বিতর্কিতদের নাম কোনোভাবেই শোভা পায় না বলে জানিয়েছেন জুলাই আন্দোলনের বিপ্লবী নেত্রী জেসিনা মুর্শিদ।

বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গেজেট অধিশাখা থেকে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-২০২৪-এ শহিদদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এই তালিকায় দেখা গেছে, যশোর জেলার অন্তর্ভুক্তদের মধ্যে বিতর্কিত তিনজনের নাম। এরা হলেন- যশোর শহরের আলোচিত মাদকপল্লি নামে পরিচিত ও অপরাধপ্রবণ এলাকা চাঁচড়া রায়পাড়া এলাকার ফজল মাহাদী চয়ন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-২০২৪-এ শহিদের তালিকায় তার ক্রমনম্বর ৫২২। আরেকজন হলেন- চয়নের বন্ধু একই এলাকার রিয়াদ শেখ। যার ক্রমনম্বর ৬৯১। এ ছাড়া যশোর শহরের আরেক অপরাধপ্রবণ এলাকা খড়কির কারবালা এলাকার রুহান ইসলাম। শহিদের তালিকায় তার ক্রমনম্বর হচ্ছে ৩৩৫।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র এবং চাঁচড়া রায়পাড়া এলাকার বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মৎস্যচাষি ও একজন কলেজ শিক্ষক জানান, ফজল মাহাদী চয়ন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন যশোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াসের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী রাকিব ও প্রিন্সের সঙ্গে একযোগে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাতেন। এলাকায় মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজির সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। একই এলাকার জুম্মান হত্যা মামলার আসামি ছিলেন চয়ন। তার সৎ পিতা পুলিশের এস আই জামাল হোসেন। পিতা পুলিশ সদস্য হওয়ায় অনেক মামলা থেকে রেহাই পেয়েছেন চয়ন। তার নানা তোতা মিয়া এলাকার আওয়ামী লীগের ত্রাস ছিলেন। ইতোমধ্যে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে এস আই জামাল হোসেনের নামে মামলা হয়েছে। তিনি এখন পলাতক।

অভিযোগের ব্যাপারে ফজল মাহাদী চয়নের মা রওশনারা রুনা বলেন, ষড়যন্ত্র করে রুম্মান হত্যা মামলায় আমার ছেলের নাম দেওয়া হয়েছে। আর গত ১৫ বছর ধরে ছাত্রলীগ যুবলীগ না করে কেউ কি থাকতে পেরেছে- এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি। দাবি করেন, তার ছেলে জাবির হোটেলে আটকেপড়াদের উদ্ধারকাজে গিয়েছিল।

শহিদের তালিকায় নাম রয়েছে চয়নের বন্ধু রিয়াদ শেখের। রিয়াদের বাবা কাবিল শেখ বিএনপির রাজনীতি করেন। তিনি চাঁচড়া-রায়পাড়া আঞ্চলিক বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু তার ছেলে রিয়াদ এলাকায় ফজল মাহাদী চয়নের সঙ্গে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রিয়াদের বাবা কাবিল শেখ বলেন, আমার ছেলে কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল না। চয়নের বাড়ি আমাদের বাড়ির সামনাসামনি। সেই হিসেবে আমার ছেলে ও চয়নের মধ্যে স্বাভাবিক কথাবার্তা হতো। তিনি আরও বলেন, অত্যাধুনিক জাবির হোটেলে আমার ছেলে কোনো দিন প্রবেশ করেনি। হোটেলের মধ্যে কী আছে, তা দেখার কৌতূহলে সেদিন সেখানে গিয়েছিল। 

শহিদ তালিকার আরেকজন রুহান ইসলাম ছিলেন পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। খড়কি কারবালা এলাকার কুখ্যাত আক্তারুজ্জামান ডিকু বাহিনীর সদস্য। এ বাহিনী খুন, ছিনতাই ও মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। ২০২৩ সালের ১৬ অক্টোবর শহরের মুজিব সড়কে প্রকাশ্যে রিপন হোসেন নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে ডিকু বাহিনীর সদস্যরা। এদিন রুহানকে মুজিব সড়ক এলাকায় দেখা যায় বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সার্কিট হাউসপাড়ার এক দোকান কর্মচারী জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারবালা এলাকার এক দোকানি জানান, রুহানকে ডিকু ও তার সঙ্গীদের সঙ্গে চলাচল করতে দেখেছি। অভিযোগের ব্যাপারে রুহান ইসলামের বড় ভাই রাতুল মিজি বলেন, আমার ভাই কোনো কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ছিল না। জাবির হোটেলের আগুন নেভাতে ও আটকেপড়াদের উদ্ধারকাজের জন্য গিয়ে সে মারা গেছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা শাখার সদস্যসচিব জেসিনা মুর্শিদ বলেন, যাদের নাম বলছেন তারা আন্দোলনে চোখে পড়ার মতো কেউ ছিল না। আন্দোলনে তাদের ভূমিকা কী ছিল তা আমার জানা নেই। 

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, যে তালিকায় আবু সাঈদ, মুগ্ধের মতো বিপ্লবীদের নাম রয়েছে, সে তালিকায় বিতর্কিত নাম কোনোভাবেই শোভা পায় না। তিনি আরও বলেন, মানবিক কারণে আগুনে মারা যাওয়াদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করা যেতে পারে। কিন্তু শহিদের তালিকায় নাম রাখা যাবে না। তিনি তালিকা নিয়ে আরও যাচাই-বাছাই করা উচিত বলে মনে করেন।

গত ৫ আগস্ট কর্তৃত্ববাদী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর আওয়ামী লীগ নেতা শাহিন চাকলাদারের ১৪ তলাবিশিষ্ট অভিজাত হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর সুযোগসন্ধানী দুর্বৃত্তরা সেখানে দফায় দফায় লুটপাট করে। ওই সময় হোটেল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ না থাকায় দুর্বৃত্তরা যে যার মতো মালামাল নিয়ে যায়। হোটেলটির ১৪ তলায় ছিল মদের বার। যারা ১৪ তলাসহ ওপরের দিকে লুটপাট করতে গিয়েছিল তাদের অনেকেই নামতে পারেনি। দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে মারা যায়। সবমিলিয়ে মারা যান ২৪ জন। আহত হন শতাধিক। নিহতদের মধ্যে মাত্র দুজন ছিলেন হোটেলের কর্মচারী। আর কিছু উৎসুক সাধারণ মানুষ দেখতে গিয়ে মারা যান।

অনুগ্রহ করে এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© ২০২৫ | যশোর টাইমস কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত
Theme Customized By BreakingNews