যশোরের অভয়নগরে ফুচকা খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২১৩ জন। তাদের মধ্যে ১৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত ফুচকা বিক্রেতাকে খুঁজছে পুলিশ।
বুধবার (২ এপ্রিল) দুপুর ৩টা পর্যন্ত ২১৩ জন রোগী ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত সোমবার ঈদের দিন থেকে বুধবার পর্যন্ত রোগী ভর্তির এ তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন ৫৩ জন। তাছাড়া আরও ৫০ জন হাসপাতালের বর্হিবিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, খাবার প্রস্তুতে ত্রুটির কারণে একযোগে এত মানুষ পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও গর্ভবতী নারীসহ গুরুতর কিছু রোগী রয়েছে।
অভয়নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আবির হোসেন বলেন, খাবারে জীবাণু থাকার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বেশিরভাগ রোগীর পেটে ব্যাথা, মাথা ব্যাথা, বমি, পাতলা পায়খানা ও জ্বর দেখা দিয়েছে। সোমবার থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত দুই শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। ভর্তি হয়েছেন ২১৩ জন। রোগীদের মধ্যে ১৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদেরকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রতিবছর ঈদের দিন ভৈরব নদের ব্রিজের পূর্ব পাশে হরেকরকম খাবারের দোকান বসে। গ্রামের আশপাশ ও দূর দুরান্ত থেকে শত শত মানুষ শিশুদের নিয়ে ভৈরব ব্রিজ দেখতে আসে। সোমবার ঈদের দিনও শতশত শিশু, নারী ও পুরুষ সেখানে এসেছিলো। রুপদিয়া এলাকা থেকে মনির হোসেন নামে এক ব্যক্তি মেলায় অস্থায়ী ফুচকার দোকান দিয়েছিল। মেলায় বেড়াতে আসা অনেকেই ওই দোকানের ফুচকা খেয়েছিলো। ফুচকা খাওয়ার পর প্রায় সবার পেটে যন্ত্রণা, পাতলা পায়খানা, বমি, জ্বর ও খিচুনি শুরু হয়। এরপর অনেকে সেদিন গভীর রাতে আবার কেউ কেউ পরদিন সকালে হাসপাতালে ভর্তি হন। এভাবে বুধবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত ২১৩ জন ভর্তির তথ্য জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা ইব্রাহিম শেখ জানিয়েছেন, ঈদের দিন চার সন্তান নিয়ে তিনি ওই মেলায় ঘুরতে যান। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারা দোকান থেকে ফুচকা খেয়েছিলেন। সেদিন গভীর রাত থেকে তারা সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। সবশেষ মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকদিন হাসপাতালে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
একইভাবে নোয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রউফ গাজী বলেন, আমি ফুচকা খাইনি কিন্তু পরিবারের পাঁচজনকে ডাক্তারের পরামর্শে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছি। প্রত্যেকের গায়ে ১০৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা উঠেছিল। এখন কিছুটা ভাল হলেও শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আলিম বলেন, এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি। তবে ঘটনাটি শুনেছি। ফুচকা বিক্রেতাকে খুঁজছি। তার বাড়ি সদর উপজেলা রূপদিয়া এলাকায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
Leave a Reply