ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি নিয়ে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন ট্রাম্প

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে নতুন করে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করতে যাচ্ছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। যুদ্ধবিরতি চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী মার্কিন কর্মকর্তারা, যদিও রাশিয়া বেশ কিছু কঠিন শর্ত দিয়েছে।

গত সপ্তাহে সউদী আরবে এক কূটনৈতিক বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন। পুতিন এই প্রস্তাবে সম্মতি জানালেও তিনি কিছু শর্ত আরোপ করেছেন, যা তার মতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জরুরি। চলমান আলোচনার ধারাবাহিকতায়, ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকটিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। মার্কিন কর্মকর্তারা আশা করছেন, এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতার নতুন পথ খুলতে পারে।

স্টিভ উইটকফ মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, যুক্তরাষ্ট্র কেবল রাশিয়ার সঙ্গে নয়, বরং ইউক্রেনের সঙ্গেও নিবিড় যোগাযোগ রাখছে এবং সম্ভাব্য চুক্তির ব্যাপারে তাদের পরামর্শ দিচ্ছে। তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, এই সপ্তাহে দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে সত্যিই ভালো এবং ইতিবাচক আলোচনা হতে যাচ্ছে।” 

যুক্তরাষ্ট্রের আলোচকেরা এই সপ্তাহের মধ্যেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আরও বৈঠকে বসবেন। বিশেষ দূত উইটকফের মতে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই যুদ্ধবিরতি চুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা ইতিবাচক অগ্রগতির ব্যাপারে সত্যিই আশাবাদী।” তবে আলোচনার মূল চ্যালেঞ্জ হলো, রাশিয়ার দখলে থাকা ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ডের ভবিষ্যৎ কী হবে—এ নিয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো সমাধান আসেনি।

স্টিভ উইটকফ আরও জানান, গত বৃহস্পতিবার তিনি পুতিনের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন, যা মাত্র পাঁচ থেকে দশ মিনিট স্থায়ী হয়। এরপর তিনি মস্কোর মার্কিন দূতাবাসে ফিরে যান এবং সেই বৈঠকের বিস্তারিত ট্রাম্প, ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুসি ওয়াইলস, এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎজ-কে জানান।

তবে এই আলোচনার ফলাফল নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। বিশেষ করে, রাশিয়ার শর্ত ও ইউক্রেনের প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে। যুদ্ধবিরতির নামে যদি ইউক্রেনের ভূখণ্ড রাশিয়ার অধীনে রেখে কোনো চুক্তি করা হয়, তাহলে তা কতটা কার্যকর হবে—সে নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

বিশ্ব সম্প্রদায় এই আলোচনার দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে এটি হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক নতুন মোড়, যা ইউরোপ ও বিশ্ব রাজনীতিতেও বড় পরিবর্তন আনতে পারে। তবে আসল প্রশ্ন হলো—এই চুক্তি কতটা স্থায়ী হবে এবং উভয় পক্ষের স্বার্থ কতটা রক্ষা করা যাবে? তথ্যসূত্র : সিএনএন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here