ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্রমশ গতি সঞ্চার হচ্ছে। ইতোমধ্যেই বিশ্বের ১৪৫টিরও বেশি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে বা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপ ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের কয়েকটি দেশ নতুন করে এই কাতারে যোগ দিয়েছে।
১৯৮৮ সালে ফিলিস্তিন জাতীয় পরিষদ (পিএনসি) স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণার পরপরই আফ্রিকা, এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার বহু দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়। পরবর্তী তিন দশকে ধাপে ধাপে আরও অনেক দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি জানায়। তবে পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অনেক প্রভাবশালী দেশ তখন পর্যন্ত বিরত ছিল।
২০২৪ সালের শেষ দিকে ইউরোপ ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের বার্বাডোস, আয়ারল্যান্ড, জ্যামাইকা, নরওয়ে এবং স্পেন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়। আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস এ সময় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “বিশ্বের কথা শুনতে হবে এবং গাজার মানবিক বিপর্যয় নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।”
২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা ও ফ্রান্সও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছে। একই সময়ে যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, ইসরায়েল যদি গাজায় যুদ্ধবিরতিসহ নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তবে তারাও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।
এই ঘোষণাগুলো যুক্তরাষ্ট্রকে আরও বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে সহযোগিতা ও মানবিক সহায়তা অবরোধের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মিত্র দেশই এখন ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। এর ফলে ওয়াশিংটন ও তেলআবিবের কূটনৈতিক চাপও বাড়ছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করে একে “হামাসকে পুরস্কার” হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এই স্বীকৃতি প্রচেষ্টার তীব্র সমালোচনা করেছেন।
এমন সময় এই স্বীকৃতিগুলো আসছে, যখন গাজায় খাদ্য সংকট ও মানবিক দুর্ভিক্ষ তীব্র আকার নিয়েছে। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইসরায়েলের অবরোধকে দায়ী করে এর কড়া নিন্দা জানিয়েছে।
সূত্র: সিএনএন