৪৮ ঘণ্টায় ইরান ও গাজায় নিহত ২০০ জনের বেশি, আহত সহস্রাধিক
মধ্যপ্রাচ্য যেন নতুন এক রক্তাক্ত অধ্যায় দেখছে—একদিকে ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলায় কাঁপছে ইরান, অন্যদিকে থেমে নেই গাজা উপত্যকায় ধারাবাহিক গণহত্যা। মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় এই দুই ফ্রন্টে নিহত হয়েছেন ২০০ জনের বেশি, আহত হয়েছেন প্রায় ১,০০০ জন।
গাজায় ভয়াবহতা: ক্ষুধার্তদের ওপর গুলি, হাসপাতালগুলো ভেঙে পড়ার পথে
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, শুক্রবার সকাল থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো ধারাবাহিক হামলায় এখন পর্যন্ত ৯০ জন নিহত এবং ৬০৫ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ত্রাণ নিতে আসা সাধারণ মানুষ, নারী ও শিশু। শুধু শনিবার ভোর থেকে ইসরায়েলি ড্রোন ও ট্যাংকের হামলায় ২৭ জন নিহত হয়েছেন, যাদের ১১ জনই ছিলেন বেসামরিক নাগরিক।
হামাস এক বিবৃতিতে জানায়, “ইসরায়েল গাজায় পরিকল্পিতভাবে দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দিচ্ছে—এটি একটি নজিরবিহীন যুদ্ধাপরাধ।”
ত্রাণের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে প্রাণ গেল ২৯ জনের
শেষ দুই দিনে গাজায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ২৯ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন ৩৮০ জনের বেশি। এই পরিস্থিতিতে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোকেই রক্তের ময়দানে পরিণত করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এখন পর্যন্ত ত্রাণকেন্দ্রে হামলায় নিহত ২৭৪ জন, আহত ২,৫৩২ জন।
ইরানে বিমান হামলায় নিহত ১০৪, পাল্টা জবাবে ইসরায়েলও কাঁপছে
অন্যদিকে, ইসরায়েল শুক্রবার ভোরে ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ চালায় ইরানের অন্তত ৮টি শহরে। এতে ১০৪ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে আছেন সামরিক কমান্ডার ও পরমাণু বিজ্ঞানীরা। আহত হয়েছেন আরও ৩৮০ জন।
এর জবাবে ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসরায়েলের অন্তত ১৫০টি সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে আঘাত হানে। এতে ৩ জন নিহত এবং ১৭০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বিশ্লেষকদের হুঁশিয়ারি: এই যুদ্ধ থামাতে না পারলে গোটা অঞ্চল পুড়ে ছাই হবে
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের এই সমান্তরাল আগ্রাসন পরিস্থিতিকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে গেছে, যেখান থেকে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সর্বাত্মক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। মানবিক বিপর্যয়ও ক্রমেই চরমে উঠছে।