কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার জেরে ফের উত্তপ্ত হয়েছে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত। মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাত ১টার পর পাকিস্তানের ছয়টি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। এতে অন্তত আটজন নিহত এবং আরও ৩৫ জন আহত হয়েছেন। হামলার পরপরই পাকিস্তানও পাল্টা জবাব দিয়েছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, তারা হামলায় অংশ নেওয়া ভারতের পাঁচটি বিমান ভূপাতিত করেছে। এ ছাড়া কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেড সদর দপ্তর ও একটি তল্লাশি চৌকি ধ্বংস করার কথাও জানিয়েছে তারা।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভাষ্য, পাকিস্তানি সেনাদের ছোড়া গোলায় কাশ্মীরে তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ভূপাতিত পাঁচটি ভারতীয় বিমানের মধ্যে রয়েছে তিনটি রাফাল, একটি রাশিয়ান এসইউ-৩০ এবং একটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছেন, পাকিস্তানে হামলার কিছুক্ষণের মধ্যেই এসব বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে।
তবে ভারতের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেওয়া হয়নি। সত্যিই যদি এই ঘটনা ঘটে থাকে, তা হলে এটি সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে ভারতের জন্য বড় ধরনের সামরিক ক্ষতি হিসেবে বিবেচিত হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ভারতের এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এর উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, “আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, পাকিস্তান নিজের মতো সময় ও জায়গা বেছে নিয়ে উপযুক্ত জবাব দেবে। এই উসকানির জবাব অবশ্যই দেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বিমান বাহিনীর সব জেট আকাশে টহল দিচ্ছে। ভারতীয় আকাশসীমা থেকেই এই কাপুরুষোচিত হামলা চালানো হয়েছে। পাকিস্তানের আকাশসীমায় তারা কখনোই প্রবেশ করতে পারেনি। ভারতের এই সাময়িক উল্লাস তাদের দীর্ঘস্থায়ী দুঃখের কারণ হবে।”
ভারতের এই অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পরিচালিত হয়। ভারতের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পাকিস্তানি সামরিক স্থাপনায় নয়, সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর ঘাঁটি লক্ষ্য করেই এই হামলা চালানো হয়েছে। ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, পাঞ্জাবের ভাওয়ালপুরে জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান কার্যালয় ও মুরিদকে লস্কর-ই-তৈয়েবার প্রধান কার্যালয়সহ নয়টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে।
পাকিস্তানের ছয় শহর—পাঞ্জাবের শিয়ালকোট, ভাওয়ালপুর ও মুরিদকে এবং আজাদ কাশ্মীরের মুজাফ্ফরাবাদ, বাগ ও কোটলি—এই হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই সংঘাত ঘিরে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে বিশ্ববাসী।
Leave a Reply