কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে হামলার পরে কার্যত রাতারাতি বদলে গিয়েছে উপমহাদেশের রাজনীতি। সীমান্তে বাড়ছে হামলার ভয়। এমনকি যুদ্ধের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হলে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকিও দিচ্ছে একদেশ অপর দেশকে। ফলে ‘বহিঃশত্রুর’ হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করছে ভারত।
এই প্রেক্ষাপটে, ভারতে অবস্থানকারী পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই মাঝে জাতীয় সুরক্ষার প্রশ্নে বারবার উঠে আসছে শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন এলাকার প্রসঙ্গ, যা ‘চিকেন’স নেক’ নামে পরিচিত।
জাতীয় সুরক্ষার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ‘চিকেন’স নেক’-এর ওপর বিশেষ নজর রাখে সুরক্ষা বাহিনী। এবার সেই চিকেন নেকের অংশ হিসেবে শিলিগুড়ির নিরাপত্তা কতটা বজায় রয়েছে, কতটা নিশ্চিত করা হয়েছে—তা জানতে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ ও পুরনিগমের বিরোধী দলনেতা অমিত জৈন প্রমুখ।
শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘এই মুহূর্তে আকাশে যেমন ঘন কালো মেঘ, ঠিক তেমনই শিলিগুড়ির নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও উদ্বেগজনক অবস্থা। শিলিগুড়ি শহর ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পহেলগাঁও পরিস্থিতির পরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন। নির্দেশিকা যাই হোক না কেন, যদি কোনও রাজ্যে পাকিস্তানি নাগরিক থাকে, তাদের দেশ ছাড়ার নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে সংবাদমাধ্যমে তথ্য আসছে, কিন্তু একমাত্র পশ্চিমবঙ্গে কী হচ্ছে, সে বিষয়ে সাধারণ মানুষের কাছে কোনও স্পষ্ট তথ্য নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পুলিশের কাছে এসেছিলাম। আশা করি রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের যেসব সংস্থা বিষয়টি মনিটর করে, তারা সক্রিয় হবে। শিলিগুড়ি একটি সংবেদনশীল এলাকা। কেউ যদি লং টার্ম ভিসায় এখানে থেকে থাকে, তা হলে সেই বিষয়ে বাড়তি নজর দেওয়া দরকার। এ বিষয়ে যাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, তারা যেন সেই সহযোগিতা গ্রহণ করেন—এই আবেদন জানিয়েছি।’
এছাড়াও তিনি বলেন, ‘এই সময়কালে শিলিগুড়ি শহর চারদিক থেকে কার্যত ঘিরে ফেলা হচ্ছে। আমাদের ধারণা, অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা বাড়ছে। এমনকি তৃণমূল কাউন্সিলররাও অভিযোগ করেছেন, নদীর চরে অজানা লোক বসবাস শুরু করেছে। নেতারা টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে, ওরা নানা ধরনের জাল নথিপত্র তৈরি করছে। এতে শিলিগুড়ি শহরের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।’
‘আমি শিলিগুড়ির বিধায়ক, এখানেই বড় হয়েছি, তাই জানি—হঠাৎ করে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ এখানে থাকতে শুরু করেছেন। যেখানে ৪–৫ জন থাকার কথা, সেখানে ২০–২৫ জন করে থাকছে। একেকটি ছোট জায়গায় অসংখ্য মানুষ অবস্থান করছে। এলাকাগুলিকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বিষয়।’
এখন দেখার বিষয়, পুলিশ প্রশাসন এই পরিস্থিতি নিয়ে কতটা সক্রিয় ভূমিকা নেয়।
Leave a Reply