এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে স্বর্ণ লুট: পুলিশের চার সদস্য জড়িত, গ্রেপ্তার ৩

রাজধানীর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে আট মাস আগে সংঘটিত এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৭০ ভরি স্বর্ণ লুটের ঘটনায় পুলিশের চার সদস্য জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তদন্তে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ইতোমধ্যে তিন পুলিশ সদস্য ও একজন মাইক্রোবাস চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—কুমিল্লা জেলা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন সরকার, কনস্টেবল মিজানুর রহমান ও আবু বকর, এবং মাইক্রোবাসচালক আব্দুস সালাম। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবি রমনা জোনের এসআই মো. ইরফান খান জানান, ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং দীর্ঘ তদন্তের মাধ্যমে এই লুটের ঘটনার রহস্য উন্মোচন সম্ভব হয়েছে।

মামলার নথি ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর এক আত্মীয়ের বিয়েতে অংশ নিতে তিনি ঢাকায় আসেন। তার সঙ্গে ছিলেন খালা সাজিয়া সুলতানা ও খালাতো বোন জিনাত সুলতানা। ঢাকায় এসে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি উবার প্রাইভেট কার ভাড়া করে পুরান ঢাকার বংশালে যাচ্ছিলেন তারা।

গাড়িটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ধরে মগবাজারের দিকে যাওয়ার সময়, টোল প্লাজা পার হওয়ার পরপরই পুলিশের স্টিকার লাগানো একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস তাদের গতি রোধ করে। গাড়ি থেকে নামা চার ব্যক্তি নিজেদের যৌথ বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে প্রাইভেট কারে থাকা যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। একপর্যায়ে সাইফুল ইসলামকে হাতকড়া পরিয়ে, সবার সঙ্গে জোরপূর্বক কালো মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম জানান, মাইক্রোবাসের জানালায় কালো গ্লাস থাকায় বাইরের কেউ ভেতরে কিছু দেখতে পারেনি। গাড়ির ভেতরে তাদের মারধর করে মূল্যবান জিনিসপত্র, বিশেষ করে ৭০ ভরি স্বর্ণ লুট করে নেওয়া হয়। অভিযুক্তরা মাদকের মামলা ও গুলি করে হত্যা করার হুমকি দিয়েও ভয়ভীতি দেখান। পরে ভুক্তভোগীদের রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা।

এই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত এখনো চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here