ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে দুই ভাই প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা ও গ্রেপ্তারের জেরে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বুধবার (৪ জুন) সকালে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ইউনুস আলী (৫৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এর আগে একই ঘটনায় তার বড় ভাই মহব্বত আলী (৬০) নিহত হন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার ওসি সহিদুল ইসলাম হাওলাদার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রোববার (১ জুন) কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের নাকোবাড়িয়া গ্রামে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ হয়। এতে মহব্বত আলী ঘটনাস্থলেই নিহত হন, এবং তার ছোট ভাই ইউনুস আলী গুরুতর আহত হন। ইউনুসকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে তিন দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বুধবার ভোরে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় আরও অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
জানা যায়, জামাল ইউনিয়নে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলামের সঙ্গে আরেক গ্রুপের নেতা আরিফ, লিটন, বুলু ও আশরাফের সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জেরে রোববার সকালে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়।
নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলায় বিএনপি নেতা নজরুল ইসলামসহ ৫৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। মামলা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাতে বিএনপির একাংশ কালীগঞ্জ শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও থানা ঘেরাও করে। তারা দাবি করেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মামলায় অনেকের নাম অন্যায়ভাবে যুক্ত করা হয়েছে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি সহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, “রোববারের সংঘর্ষে আহত ইউনুস আলী আজ মারা গেছেন। এ নিয়ে মোট দুজনের মৃত্যু হলো। মামলার ভিত্তিতে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
উল্লেখ্য, গত ১ জুন কালীগঞ্জের নাকোবাড়িয়া ও তালিয়ান গ্রামে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মহব্বত আলী নিহত হন। তারপর তার ভাই ইউনুস আলী যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোরে মারা যান।