পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ জানাতে গিয়ে থানায় উল্টো নিজেই পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন এক গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (২৩ মে) রাতে বোদা থানায়। আটক নারী শিউলি বেগম (৩২), নয়াদিঘি এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকের মেয়ে এবং পার্শ্ববর্তী বামনহাট এলাকার রফিক মন্ডলের স্ত্রী।
শিউলি বেগম ও তার স্বজনদের ভাষ্যমতে, ২০১২ সালে রফিক মন্ডলের সঙ্গে বিয়ে হয় শিউলির। তাদের এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। বিয়ের শুরুতে সবকিছু স্বাভাবিক থাকলেও ধীরে ধীরে রফিকের আসল রূপ প্রকাশ পায়। শিউলিকে প্রায়ই বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা আনতে বাধ্য করা হতো। এতে রাজি না হলে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হতো। নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বাড়তে থাকায় শিউলি বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ করতে আসেন।
তবে অভিযোগ জানাতে এসে শিউলি নিজেই পুলিশের হাতে আটক হন, যা তাকে হতবাক করে। তিনি বলেন, “আমি স্বামীর নির্যাতনের বিচার চাইতে এসেছিলাম, কিন্তু কেন আমাকে আটক করা হলো বুঝতে পারছি না।”
শিউলির বাবা আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, মেয়ের সংসার টিকিয়ে রাখতে ইতিমধ্যেই জামাই রফিককে একাধিকবার আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সাত বছর আগে রফিক, শিউলির কাছ থেকে চাতুরতার মাধ্যমে সই করিয়ে এনজিও সংস্থা ইএসডিও (ESDO) থেকে তিন লাখ টাকা ঋণ নেন। ঋণ সংক্রান্ত মামলার বিষয়ে তারা কিছুই জানতেন না।
ঘটনার পর শিউলির শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তাকে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে শারীরিক নির্যাতনের কিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে, শিউলির স্বামী রফিক মন্ডল ফোনে জানান, স্ত্রী নির্যাতন কিংবা কোনো মামলার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিম উদ্দিন জানান, শিউলি বেগমের বিরুদ্ধে পূর্বেই একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় তাকে আটক করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।